স্বাগতম। আপনি এই ব্লগের counter তম পাঠক

৭ এপ্রি, ২০১০

সন্তোষ স্যার চলে গেলেন

কলেজ জীবনে যে কয়জন প্রিয় শিক্ষক  ছিল তারমধ্যে সন্তোষ স্যার অন্যতম প্রিয় স্যার ছিলেন। ক্লাসে খুব বেশি হাসি  খুশি না থাকলেও খুব মনযোগ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতেন। আমরা ক্লাসে একটু  অমনযোগী হলে বা হইচই করলে তার কাছে এলার্জির মত লাগতো। তিনি রসায়ন খুব  ভালভাবে বোঝাতেন, আমরা একবার না বুঝলে বারবার বোঝাতেন। আবার আমার অনেক  বন্ধু ছিল যারা আগে থেকেই কোন একটা অধ্যায় পড়ে রাখতো, ফলে স্যার যখন ক্লাসে  পড়াতো তারা মনযোগ দিয়ে শুনতো না। স্যার সেটা বুঝতেন এবং আমাদের বলতেন যে,  “একটা চকের দাগের উপর আর একটা দাগ দিলে সেটা যেমন মোটা হয় তেমনি তুমি যদি  কোন পড়া বা জ্ঞান আগেই থেকেই জান সেটা যদি আবার শোন বা পড় তাহলে তোমার  জ্ঞান কখনো কমবে না বরং বাড়বে”। তাইতো স্যার কোন সহজ পড়া আরও সহজ করে  পড়াতেন এবং কঠিন পড়া বারবার পড়াতেন বিশেষ করে রসায়ন দ্বিতীয় পত্র। অনেক সময়  আমরা তার পড়ানো শুনতে শুনতে অধৈর্য হয়ে যেতাম, কিন্তু স্যার পড়ানোতে ছিল  অসীম ধৌর্যের অধিকারী। আমরা যখন যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়তাম, তখন রসায়ন  বিভাগে আমাদের অনান্য শিক্ষক ছিলেন মনোয়ার স্যার এবং জেসমিন ম্যাডাম।  ম্যাডামকে আমরা খুব বেশি দিন পাইনি কারন ম্যাডাম অনেক দিন ছুটিতে ছিলেন আর  মনোয়ার স্যার আমাদের একটু জটিল করে পড়াতেন বিশেষ করে পড়ানোর মাঝে ইংরেজি  শব্দ বেশী বলতেন। তার পড়ানোর স্টাইল হয়তো স্টান্ডার্ড ছিল কিন্তু কলেজ  জীবনে সেটা আমাদের কাছে কঠিন মনে হত। তাই আমাদের সবার মাঝে সন্তোস স্যার   জনপ্রিয় একটা স্যার ছিলেন। হঠাৎ রিগানের ফোন পেলাম, স্যার গতকাল [৬ই  এপ্রিল,২০১০] মারা গেছেন। স্যার যে ক্যান্সারে ভুগছিলেন সেটাও কাল জানলাম।  আজ বারবার স্যারের কথা মনে পড়ছে। স্যার মারা গেছেন কিন্তু সন্তোষ কুমার  সাহা আমাদের মাঝে একজন আদর্শ শিক্ষক হয়ে বেঁচে আছেন।

শেয়ার করুন

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More