স্বাগতম। আপনি এই ব্লগের counter তম পাঠক

২৭ জানু, ২০১০

হল উদ্ধারে শিক্ষার্থীদের ফের আন্দোলন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদখল ১১টি হল, একটি খেলার মাঠ উদ্ধার ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হল উদ্ধার ও ছাত্র অধিকার রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফা সংঘর্ষে প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। একপর্যায়ে আন্দোলন ক্যাম্পাসের বাইরে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ ছাত্ররা বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় সূত্রাপুর ও কোতোয়ালি থানার পুলিশ নয়জনকে আটক করে।
গত বছরের ২৭ জানুয়ারি হল উদ্ধারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলা চালায় পুলিশ। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় টানা এক মাস বন্ধ থাকে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাত ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলাও করে। কিন্তু গত এক বছরেও শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়নি।
দিনটি স্মরণে গতকাল সকাল ১০টার আগেই ক্লাস বর্জন করে বিভিন্ন বিভাগের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে ছোট ছোট বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিলটি প্রশাসনিক ভবনে পৌঁছালে তারা প্রক্টরের কক্ষের দরজায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা দোতলায় উপাচার্যের কার্যালয়ে উঠতে চাইলে নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দেয়।
বেলা সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের মূল ফটক দিয়ে বাইরে যেতে চাইলে পুলিশি বাধার মুখে মানববন্ধন শুরু করেন। শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন চলার একপর্যায়ে বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে থাকা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। তখন পুলিশ পাল্টা জবাবে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীরা আবারও সংগঠিত হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে প্রায় অর্ধশতাধিক জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন।
বেলা ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা আবারও ভাস্কর্য চত্বরে মানববন্ধন শুরু করেন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, প্রক্টর কাজী আসাদুজ্জামান, ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান, ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
এদিকে বেলা একটার দিকে বেশ কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন সদরঘাট সড়ক এবং লক্ষ্মীবাজার এলাকায় বেশ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের প্রাইভেট কারের গ্লাসও ভেঙে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় সদরঘাটের সড়কে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকে। ব্যবসায়ীরাও দোকানপাট বন্ধ করে দিলে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নাহিদুজ্জামান, মো. মোনায়েম ও বাবুলসহ নয়জন শিক্ষার্থীকে আটক করে।
উপাচার্য অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেদখল হওয়া হল উদ্ধারের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। তবে এ ক্ষেত্রে আন্দোলন হতে হবে শান্তিপূর্ণ। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে মেনে নেওয়া হবে না।’

শেয়ার করুন

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More